#আমার_জীবনের_ছোট_গল্প ( হয়তোবা এই ছোটগল্পটা অনেক মানুষের জীবন পাল্টে দিতে পারে কিংবা নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে পারে )
জীবনে স্বপ্ন ছিল আমার নামের পাশে " Googler ( গুগলার ) শব্দটি থাকবে। আমি কখনো Nasa, Microsoft সহ বড় বড় কোন প্রতিষ্ঠান এ জব করার স্বপ্ন দেখতাম না। আমি শুধুমাত্র গুগল এ জব করার স্বপ্ন দেখতাম। আমি জানি না, আমার কেন গুগল ভালো লাগে। কখনো এর কারণ ও খুঁজতে যায় নি, তবে শুধু এইটুকু জানি আমার গুগল ভালো লাগে। আমার জীবনে অনেক উত্তান - পতন আছে। জীবনে আমি অনেক কিছু হারিয়েছি। এমনকি ভার্সিটি এর ডিগ্রিটা আমার পর্যন্ত নেই। নিজের সাথে নিজে ফাইট করে গেছি, কখনো কাউকে বুঝতে দেই নি। আমার পরিবার আমার বিপক্ষে, শুধু আমার পরিবার না, আমার রিলেটিভ সবাই। নিজের পরিবার কিংবা সবার বিপক্ষে গিয়ে যুদ্ধ করাটা যে ঠিক কতোটা পরিমাণ এর ট্রাফ সেটা শুধুমাত্র ভুক্তভোগীরা জানে। শুধু আমার পাশে পেয়েছিলাম, " আমার বড় কাকাকে " আমার ফ্যামিলি এর মধ্যে। যে আমাকে সর্বদা সার্পোট করে গিছেন। একমাত্র তার ভরষা সেই সাথে বিশ্বাস আমাকে অনেকটা স্বস্তি দিত। আমার পরিবার বা আমার কাছের মানুষদের সাথে আমার সম্পর্ক এতোটাই বাজে ছিল যে, যদি আমি তাদের বলতাম সফটওয়্যার এর কথা যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবো বা সফটওয়্যার এর কাজ করবো। তখন তারা আমাকে বলতো, আমি কম্পিউটার এর কাজ ই ঠিক মতো পারি না, আবার সফটওয়্যার। কম্পিউটার এ আমার হাতের টাইপিং স্পিড পরিক্ষা করার জন্য কিংবা মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ল্ড এর কাজ আমি ঠিক মতো পারি কি না সেটা শিখার জন্যও তারা আমাকে পরামর্শ দিত। আমার বাবা অশিক্ষিত, তবে শিক্ষার জন্য সে অনেক অনুরাগী। সে গ্রামে থাকে, আমার বাবা ঠিকমতো পড়াশুনার ব্যাপারে কোন কিছু বুঝেন না তাই আমাদের ফ্যামিলি এর পড়াশুনা ব্যাপারে যে কোন ডিসিশান পরিবার এর সব লোক মিলে করা হতো। তো আমার যদি বিদেশ থেকে কোন মেইল আসতো তাহলে আমার বাবাকে বললে সে সেটা যাচাই করার জন্য আমার কাকাদের ডাকতো। একদিন এর কথা আমার মনে আছে, সেবার তুর্কিবুলসারী এর ফুল ফার্ন্ডেড স্কলারশিপ এর মেসেজটা আমাকে দিয়ে না পড়িয়ে আমার বাবার সামনে আমার কাকা তার ছেলেকে দিয়ে পড়ায়। কারণ হয়তোবা আমি ইংলিশ পারি না বা বুঝি না তাই
[ এটা তাদের ধারণা ]। কখনো কোনকিছুর প্রতিবাদ আমি করি নি, সয়ে গেছি। নিজের ক্ষোভটাকে আগুন এ পরিণত করেছিলাম। এমনিতেই ভার্সিটি থেকে বেড় হয়ে এসেছিলাম, তারপর প্রতিনিয়ত পরিবার এর মানুষের থেকে পদে পদে অপমান। জীবনটা প্রচণ্ড বিভীষিকাময় হয়ে যাচ্ছিলো দিনকে দিন। তারপরে পরিবার থেকে সরকারী চাকরী এর জন্য আমাকে প্রেশার দেওয়া হয়। টাকা ছাড়া আমার চাকরী কোনদিন ও হবে না, তাই আমার ফ্যামিলি চাকরী এর জন্য টাকাও গুছিয়ে রাখে সেই সাথে নিজের কাকা MP হবার সুবাধে তাদের ভাষ্যমতে জীবনে আমি কখনো চাকরী করতে পারবো না, নিজের যোগ্যতা বলে। তাই নিজের কাকা মানে MP কে ধরে তারা একটা সরকারী চাকরীতে আমাকে ঢুকিয়ে দিবে। আমার যোগ্যতা ইন্টার পাশ আপাতত ( কারণ ভার্সিটি থেকে আমি বেড় হয়ে চলে আসছিলাম, আর এটার কারণ আমি পোস্ট আকারে সবার সাথে শেয়ার ও করেছিলাম ) যায় হোক, ইন্টার পাশ করা ছেলের সরকারী চাকরী অফিস সহকারী, কিংবা ল্যাব সহকারী বা ফটোকপি মেশিন অপারেটর বা দারোয়ান কিংবা পিওন টাইপ এই গুলা হয় সাধারণত। চাকরী করবো না আর কারো দয়াতে চাকরী নিবো না দেখে আমার পরিবার এর সাথে আমার প্রতিদিন ঝামেলা লাগতো। আমার বাবা আমাকে বলতো, দেখবো তুই রুহুল জীবনে কতোদূর যেতে পারিস। জীবনের সাথে যুদ্ধ করেছি প্রচ্চুর তবে কখনোই নিজেকে তুচ্ছ বা নিজেকে নিয়ে আমি আশাহত হই নি। নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস ছিল আমার, আমি পারবো আর হ্যাঁ আমাকে কিছু করে দেখাতে হবে, শুধু এইটুকুই জানতাম। নিজের প্রতি আমার নিজের বিশ্বাস সেই সাথে আস্থা ই আজ আমাকে টেনে নিয়ে গেছে, আজ আমি বলতে পারি, আমিও একজন গুগলার। তবে হ্যাঁ এখন পর্যন্ত পুরোপুরিভাবে গুগল এ যেতে পারি নি তবে হ্যাঁ ইন্টার্নি এর সুযোগ পেয়েছি। তবে হ্যাঁ ইন্টার্নি থেকে পার্মানেন্ট ভাবে জবটাও পেয়ে যাব ইনশাআল্লাহ্। মানুষ চাইলেই সব পারে, যদি সে সেই পরিমাণ দৌড়ানোর ক্ষমতা রাখে। মানুষ অনেক কিছুই বলবে, তবে তুমি তো জানো, তুমি কি পারো বা কি করার ক্ষমতা তুমি রাখো, চুপ থাকো, একদিন সময় ই সবকিছুর জবাব দিয়ে দিবে। তখন তারাই লজ্জা পাবে, তোমাকে কিছুই বলতে হবে না। মনে রেখো, উচিৎ সময় সবাই ই পায়, শুধুমাত্র সময় এর অপেক্ষা তাই।

MD. Ruhul Amin
Software Engineer Intern Google ( Singapore )
Comments
Post a Comment